সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

প্রিয় পাঠক, আপনি কি সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য আবেদন করতে চাচ্ছেন। কিন্তু বুঝতে পারছেন না ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার জন্য কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে। তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই কেননা এখানে বিস্তারিত ভাবে বলা হয়েছে সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য কি কি যোগ্যতার প্রয়োজন।
সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা
আমরা অনেকেই বিভিন্ন ব্যাংক থেকে আমাদের সুবিধা অনুযায়ী সার্ভিস নিয়ে থাকি। ব্যাংকের অনেক সেবা রয়েছে সেগুলোর মধ্যে ক্রেডিট কার্ড অন্যতম। যে ব্যক্তির ব্যাংকে একাউন্ট রয়েছে তার অবশ্যই একটি ক্রেডিট কার্ড থাকতে হয়।

সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা - মূলভাব

আমাদের বাংলাদেশে অনেক ব্যাংক রয়েছে। এগুলোর মধ্যে জনপ্রিয়তা শেষে রয়েছে সিটি ব্যাংক। যে সকল গ্রাহক এই ব্যাংকের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছে শুধুমাত্র তারাই বলতে পারবে এই ব্যাংকটি কেমন। ব্যাংকের বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করা হয়।

গ্রাহকদের লেনদেনের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ব্যাংক প্রতিনিয়ত নতুন আপডেট টেকনোলজি ব্যবহার করে টাকা সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করে। লেনদেনের সময় সবচেয়ে সুরক্ষিত মাধ্যম ক্রেডিট কার্ড। এটা অতি উন্নত মানের প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে এতে গ্রাহকদের লেনদেনের সুরক্ষা বৃদ্ধি পেয়েছে।

যে ব্যক্তির ব্যাংকে একটি একাউন্ট রয়েছে এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ লেনদেন করে প্রতিনিয়ত তাদের লেনদেনের সুবিধার্থে ক্রেডিট কার্ড তৈরি করতে হয়। সিটি ব্যাংকে গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কাউকে ভোগান্তিতে না ফেলার জন্য এই ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার চালু করেছে।

কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি অঞ্চল থেকে এটিএম কার্ডের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতে পারবেন। বর্তমানে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে শুধুমাত্র টাকা লেনদেন করা যায় এটাই না, চাহিদা অনুযায়ী কেনাকাটা করার সময় কার্ড ব্যবহার করে টাকা পরিশোধ করলে আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট পাবেন।

এত সুযোগ-সুবিধা দেখার পরে আমরা বলতেই পারি বর্তমান সময়ে আমাদেরকে সাহায্য করার জন্য ক্রেডিট কার্ডের ভূমিকা অন্যতম।

আবেদন করার পূর্বের শর্তাবলী

প্রত্যেকটি ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী তাদের সার্ভিস নেওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত রয়েছে এগুলো মেনে প্রত্যেকটি কাজের জন্য আবেদন করতে হয়। ঠিক তেমনি ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে এগুলো মেনে আবেদন করলে খুব তাড়াতাড়ি কার্ড পেয়ে যাবেন।
  • আবেদনকারীকে অবশ্যই প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে অর্থাৎ ১৮ বছর হতে হবে।
  • আবেদনকারীর অবশ্যই এন আই ডি কার্ড থাকতে হবে।
  • আবেদনকারী কে অবশ্যই ইনকামের উৎস থেকে আইসিডিআর কাগজ ব্যাংকে জমা দিতে হবে। যেন তারা বুঝতে পারে আপনার ইনকাম সম্পর্কে।
  • সিটি ব্যাংকে একাউন্ট থাকতে হবে এবং প্রতিনিয়ত লেনদেন করা বাধ্যতামূলক।
  • আবেদনকারী চাকরিজীবী হলে অফিসের তিন মাসের বেতনের স্টেটমেন্ট প্রয়োজন এবং চাকরির লাইসেন্স থাকতে হবে।
  • ব্যাংকে একাউন্ট করার পর ট্রানজেকশন স্টেটমেন্ট দিয়ে ফরম পূরণ করে জমা দিতে হবে।

ক্রেডিট কার্ড পেতে কি কি লাগে

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সাধারণত দুই প্রকার। একটি চাকরিজীবীদের জন্য এবং আরেকটি ব্যবসায়ীদের জন্য। দুই প্রকার হওয়ার কারণে তাদের সকল কাগজপত্র লাগে এগুলো একটু আলাদা তবে 90% তথ্যগুলো একই হয়ে থাকে।

ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার জন্য অবশ্যই নিকটস্থ এজেন্ট এর কাছে যেতে হবে। তথ্যগুলো ১০০% সঠিক হতে হবে কোন প্রকার ভুল থাকলে আবেদন বাতিল করা হবে।
  • চাকরিজীবীদের আবেদন করার জন্য তাদের বেতন পাওয়ার সার্টিফিকেট অবশ্যই তিন মাসের থাকতে হবে। যে অফিসে চাকরি করে সেখানকার আইডি কার্ড বাধ্যতামূলক। অফিস কর্তৃক প্রদত্ত ব্যবহারিক সার্টিফিকেট।
  • ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে বি আর টি এ অনুমোদিত ট্রেড লাইসেন্স এবং পার্টনারশিপে ব্যবসা করলে পার্টনারশিপ কার্ড লাগবে। পূর্বের এক বছরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট বাধ্যতামূলক।
  • ল্যাব প্রিন্ট ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • এন আই ডি কার্ডের দুই কপি ফটোকপি।
  • চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং এনআইডি কার্ডের ফটোকপি সাথে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
  • ব্যবসায়িক সুবিধার্থে বিজনেস কার্ড সাথে টিন সার্টিফিকেট।

সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা

বর্তমান সময় ক্রেডিট কার্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম খুব সহজে টাকা লেনদেন করার জন্য। তবে সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ শুধু মাত্র আবেদন করলেই কার্ডটি দেবে না এর জন্য আপনার কাঙ্খিত যোগ্যতার প্রয়োজন পড়ে। সব কিছু যাচাই করার পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে দেখবে আসলেই আপনি ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন কি না -
  1. আবেদনকারীর বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ ৭০ বছর হতে হবে।
  2. জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে।
  3. টি আই এন অর্থাৎ টিন সার্টিফিকেট লাগবে।
  4. ফিক্সড ডিপোজিট এর রশিদ।
  5. বিগত তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট। ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে পূর্বের 12 মাসের।
  6. চাকরিজীবীদের বেতন রশিদ সাথে ব্যাংক স্টেটমেন্ট।

ক্রেডিট কার্ড আবেদন করতে কত টাকা খরচ হয়

ক্রেডিট কার্ডের সবচেয়ে বড় উপকারিতা টাকা উত্তোলন করার জন্য ব্যাংকে উপস্থিত না হয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এটিএম মেশিনের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করা যায়। এটিএম মেশিনে টাকা উত্তোলন করতে হলে কিছু চার্জ প্রযোজ্য। সর্বোচ্চ কত টাকা উত্তোলন করা যায় এবং সর্বনিম্ন কত টাকা উত্তোলন করা করতে পারবেন।

কত টাকার ক্ষেত্রে কত পার্সেন্ট চার্জ প্রযোজ্য সবগুলো এখান থেকে দেখতে পাবেন।প্রতি ১০০ টাকা উত্তোলন করার সময় ২.৫ টাকা চার্জ প্রযোজ্য। এখানে টাকা উত্তোলনের ওপর নির্ভর করে আপনার চার্জ কম এবং বেশি হবে। ১০ হাজারের বেশি টাকা তোলার সময় একটু কম খরচ হবে।

নির্দিষ্ট সীমা বেশি হলে উত্তেলিত টাকা অনুযায়ী ২.৫% অর্থাৎ ৫০০ টাকা যেটি কম হয় সেটা ব্যবহার করতে পারেন। প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত টাকা লেনদেনের সময় প্রতি পেমেন্টে ১.৫০% বা ১০০ টাকা সর্বনিম্ন চার্জ। ৫০ হাজার টাকার বেশি লেনদেন করলে ১.৫০% থেকে পেমেন্ট অনুযায়ী চার্জ নেওয়া হবে। সিটি ব্যাংকের সকল শাখা থেকে একই চার্জ প্রযোজ্য।

সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা

প্রত্যেকটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের নির্দিষ্ট কিছু সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। ঠিক তেমনভাবে সিটি ব্যাংকের ক্ষেত্রেও তারা নির্দিষ্ট কিছু সুযোগ সুবিধা প্রদান করে। এগুলো নিচে বিস্তারিতভাবে বলা হলো -
  • আপনার ইচ্ছামত কাঠ ব্যবহার করে সব সময় লেনদেন এবং এটিএম থেকে চাহিদা অনুযায়ী টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। সাথে কেনাকাটা করার সময় কার্ড ব্যবহার করলে নির্দিষ্ট পরিমাণ কিছু ডিসকাউন্ট পাবেন।
  • এখানে এটিএম মেশিন থেকে টাকা তোলার সময় খুব সহজে তুলতে পারবেন এবং ইমারজেন্সি খরচের জন্য এখান থেকে যথেষ্ট টাকা জমিয়ে রাখা যায়।
  • পেমেন্টের জন্য সম্পূর্ণ ওষুধ মুক্ত ইএমআই অর্থাৎ মাসিক কিস্তি অনুযায়ী টাকা লেনদেন করা যায় এবং সময় অনুযায়ী প্রদান করে।
  • বকেয়া লেনদেনের ক্ষেত্রে কার্ডটির ব্যবহার অন্যতম। বকেয়া বিল পরিশোধ এবং অনলাইন থেকেকেনাকাটা করে সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বিল পেমেন্ট করতে পারবেন।

সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা - শেষ কথা

তো বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদেরকে সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে, কি কি নিয়ম মেনে আবেদন করবেন, কিভাবে আবেদন করতে হয়, সর্বমোট কত টাকা খরচ করে এ সকল বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে জানানোর চেষ্টা করেছি।

আশা করি কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তরগুলো এখান থেকে জানতে পেরেছেন। নিজে উপকৃত হলে অবশ্যই নিকটস্থ আত্মীয় কিংবা বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর প্রতিনিয়ত এ সকল আপডেট তথ্য পেতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটের চোখ রাখতে ভুলবেন না।

এছাড়াও একজন মানুষের প্রতিদিনের কাজ করতে যে সকল তথ্য প্রয়োজন হয় সবগুলো আমাদের এই ওয়েবসাইটে শেয়ার করার চেষ্টা করি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url