বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা ২৫ পয়েন্ট বিস্তারিত

আপনি কি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা খুজতেছেন। এখনো পর্যন্ত অনেক জায়গায় খুঁজেছেন কিন্তু কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তরটি জানতে পারেন নি। তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই কেননা এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিতভাবে বলা হবে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে সকল তথ্য। সকল কিছু জানতে হলে অবশ্যই আর্টিকেলটি পড়তে হবে।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা ২৫ পয়েন্ট
আমি বেশ কিছুদিন ধরেই খেয়াল করে দেখছি মানুষ গুগলে সার্চ করছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা ২৫ পয়েন্ট লিখে। তাদের সঠিক তথ্য জানানোর জন্য বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে সম্পূর্ণ একটি রচনা তৈরি করেছি।

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা - মূলভাব

রচনা এমন একটি বিষয় যা প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর পড়তে হয়। পঞ্চম শ্রেণী থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি ক্লাসে এই রচনা লিখতে হয়। পরীক্ষায় রচনার জন্য আলাদা মার্ক দেওয়া হয়। পরীক্ষার প্রশ্নের প্রকারভেদে রচনার নাম পরিবর্তিত হয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনার প্রায় প্রত্যেকটি পরীক্ষায় পড়ছে।

এজন্য শিক্ষার্থীদের উচিত বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে সম্পূর্ণ রচনা জেনে রাখা। আমারে রচনাটি পড়লে মুখস্ত করার কোন প্রয়োজন নেই শুধুমাত্র মন দিয়ে একবার দেখলে পরবর্তীতে পরীক্ষার খাতায় সকল কিছু লিখতে পারবে।

পড়াশোনার প্রত্যেকটি অংশ বুঝে লেখার চেষ্টা করেছি যেন প্রত্যেকটি শিক্ষার্থী খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে। তো বন্ধুরা আসুন আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট না করে আমরা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা সম্পূর্ণ জেনে নেই।

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা ২৫ পয়েন্ট

বাংলাদেশ একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ এলাকা। এই দেশে ভূগোল, জলবায়ু এবং সমুদ্রসীমার অবস্থানের কারণে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রকার দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয়। বাংলাদেশের প্রতিবছর দুই থেকে তিনবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ এর সম্মুখীন হতে হয়। এর ফলে জনজীবন, অর্থনীতি এবং পরিবেশের অনেক মারাত্মক ক্ষতি হয়।

তবে উল্লেখযোগ্য কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগ রয়েছে যেগুলো বাংলাদেশের প্রতিবছর দেখা যায়। যেমন বন্যা, সাইক্লোন, ঘূর্ণিঝড়, খরা, ভূমিকম্প, নদী ভাঙ্গন, এবং শীতকালীন কুয়াশা। আরো কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগ রয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য এই কয়েকটি। এই দুর্যোগগুলোর ফলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সমস্যা সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।

বেশিরভাগ সময় মানুষের ভুলের কারণে এই দুর্যোগগুলো বেশি পরিমাণে দেখা যায়। প্রত্যেকটি দুর্যোগের পরে একটি নীতি বাচক পরিবর্তন দেখতে পাবে বাংলাদেশের জনজীবনে। বেশিরভাগ সময় ঘূর্ণিঝড় বন্যা এগুলোর সময় নদীর তীরবর্তী এবং নিচু এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করে ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে যায়।

এজন্য মানুষের আর্থিক বিপদ নেমে আসে। বাংলাদেশ সরকার এগুলোর কথা চিন্তা করে আন্তর্জাতিক সংস্থাদের কাছে দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে এবং দুর্যোগের সময় সাধারণ মানুষ অবস্থান করতে পারবে এমন কিছু ভবন নির্মাণ করে।

এতে দুর্যোগের সময় বিবাদগ্রস্ত মানুষ থাকতে পারে। এগুলোর থেকেও মানুষের সম্মিলিতভাবে সাহায্য করা অত্যন্ত জরুরী।

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রকারভেদ

বাংলাদেশের সাধারণত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কয়েকটি প্রকারভেদ রয়েছে। তা নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।

১। বন্যাঃ

এটা দেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত খারাপ একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যখন নদীর পানি বৃদ্ধি পায় এবং বাহিরের দেশ থেকে পানি বাংলাদেশে ছেড়ে দেওয়া হয় তখন দেশের কিছু নিচু অঞ্চল রয়েছে এগুলো পানির নিচে তলিয়ে যায়। আবার পাহাড়ি ঢলের কারেনও এই বন্যা দেখা দেয়। এই বন্যার কারণে বাসস্থান, ফসলি জমি এবং গৃহস্থালির পশু পাখি নষ্ট হয়ে যায়।

২। ঘূর্ণিঝড় ও সাইক্লোনঃ

প্রতি বছর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাংলাদেশের সমুদ্রের উপকূলীয় অংশ যেমন কক্সবাজার এই অঞ্চলগুলোতে অধিক পরিমাণে তীব্র বাতাসের ফলে ঘূর্ণিঝড় এবং সাইক্লোন এর সৃষ্টি হয়। সমুদ্রের তীরে যে সকল ঘরবাড়ি হয়েছে এগুলো ঝড়ের কারণে উত্তাল সমুদ্রের পানি এসে সবগুলো নষ্ট করে ফেলে।

এই সাইক্লোনের ফলে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে, যারা মাছের ব্যবসা করে অর্থাৎ মাছ চাষ করে তাদের জন্য সাইক্লোন একটি দুঃস্বপ্নের মত কারণ সমুদ্রের পানি পুকুরে কিংবা খালে প্রবেশ করলে সব মাছ ঢেউ এর সাথে চলে যায়। ঘূর্ণিঝড়ের ফলে কৃষকের জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায়।

৩। ভূমিকম্পঃ

বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান একটু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্পের ঘটনা কমই ঘটে। তবে কিছু বছর আগেও বড় কিছু ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছিল। যে কোন সময় ভূমিকম্প আসতে পারে। ভূমিকম্পের কারণে প্রত্যেকটি বিভাগের শহরগুলোতেই ব্যাপক হারে ক্ষয়ক্ষতি দেখা যায়।

৪। খরাঃ

এইটা প্রায় প্রতিবছর বাংলাদেশের মানুষকে দেখতে হয়। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ার কারণে এই সমস্যাটি দেখা দেয়। এগুলোর জন্য সর্বপ্রথম মানুষ তাই কেননা তারা গাছ কেটে প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করছে এর জন্য বৃষ্টি হচ্ছে না। খরা হলে কৃষক ফসল ফালাতে পারে না এই এবং খাদ্যে ও পানির অভাব দেখা দেয়।

৫। নদী ভাঙ্গনঃ

বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ হওয়ার কারণে প্রত্যেকটি অঞ্চল কোন না কোন নদীর তীরবর্তীতে অবস্থিত। তবে নদীর একেবারে কাছে যাদের ঘরবাড়ি রয়েছে তাদের প্রতি বছরই ঘরবাড়ি হারাতে হয়। বন্যার সময় নদী ভাঙ্গনের প্রবণতা অধিক হারে বৃদ্ধি পায়।

এজন্য মিটারের পর মিটার এলাকা নদীর মধ্যে বিলীন হয়ে যায়। শুধুমাত্র ঘর বাড়িই না এর সাথে ফসলের জমি নষ্ট হয় যা মানুষের ইনকামের হারকে আরো কমিয়ে দেয়।

৬। শীতকালীন কুয়াশাঃ

এইটাতে বেশি সমস্যা না হলেও কৃষি কাজে, যানবাহন চলাচল এবং সাধারণ মানুষের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করে। নিম্ন আয়ের মানুষেরা অধিক কুয়াশার কারণে বাইরে কাজ করতে পারে না এর জন্য আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কি কি প্রভাব বিস্তার করে

দুর্যোগের কারণে বেশ কয়েকটি প্রভাব মানুষের মধ্যে দেখা যায় যেমন,
  • মানবিক প্রভাবঃ দুর্যোগ শেষ হওয়ার পর মানুষের মধ্যে ভয় কাজ করে এবং ঘরবাড়ি, গৃহপালিত পশু সবকিছু হারিয়ে মানবিকভাবে ভেঙে পড়ে। এদের জন্য সরকার এবং সাধারণ মানুষের উচিত পুনর্বাসন তৈরি করা।
  • অর্থনৈতিক প্রভাবঃ প্রত্যেকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর কয়েকটি স্তরে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যেমন, কৃষি, শিল্প প্রতিষ্ঠান ব্যবসা-বাণিজ্য। যেকোনো দুর্যোগের কারণে উৎপাদন কমে যায় এবং কর্মসংস্থান হ্রাস পায়। যা দেশের খাদ্যের উপর বিরাট প্রভাব ফেলে।
  • পরিবেশগত প্রভাবঃ দুর্যোগে বনভূমি, জলাশয়, পশুপাখি এবং অন্যান্য প্রাণী শক্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বনের পশু পাখি অনেক মারা যায়। যারা মাছ চাষ করে বন্যার পানির জন্য সবকিছু বিলীন হয়ে যায়। পশুপাখি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এগুলো দেখা যায় সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায়। এছাড়া ভূমিধসের কারণে পাহাড়ি এলাকায় রাস্তা এবং ঘরবাড়ি মাটির নিচে চাপা পড়ে। এজন্য সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হয়।

দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের করণীয় কি

দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য আমাদের কিছু করণীয় রয়েছে যেগুলো প্রত্যেকটি নাগরিককে পালন করা আবশ্যক। খরা থেকে বাঁচতে হলে আমাদের প্রতিনিয়ত গাছ লাগাতে হবে। বাংলাদেশ সরকার দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য দুর্যোগ পূর্বভাস ব্যবস্থা তৈরি করেছে, সাইক্লোন সেন্টার অর্থাৎ আশ্রয়স্থল।

দুর্যোগ সহ্য করতে পারবে এমন কিছু অবকাঠামো তৈরি, জনগণকে সচেতন করা, দুর্যোগকালীন প্রস্তুতি প্রশিক্ষণ এছাড়াও তান বিতরণ ব্যবস্থা এবং পুনর্বাসন পরিকল্পনা আমাদের দেশের সরকার তৈরি করছে। সাধারণ মানুষ হিসেবে আপনাদের উচিত দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া।

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা - শেষ কথা

আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদেরকে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনার সম্পর্কে সকল তথ্যগুলো জানানোর চেষ্টা করেছি। এখানে বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রকারভেদ অর্থাৎ কি কি দুর্যোগ বাংলাদেশ দেখা যায়। দুর্যোগের জন্য আমাদের সমাজে এবং পরিবেশের উপর কি কি প্রভাব পড়ে

এবং এর ক্ষতি সম্পর্কে এছাড়াও যে কোন দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের প্রত্যেকের করণীয় কি এবং আমাদের সরকার এর করণীয় কাজগুলো কি কি। নিজে উপকৃত হলে অবশ্যই নিকটস্থ আত্মীয় কিংবা বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এ ধরনের নতুন নতুন আপডেট তথ্য পেতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিদিন চোখ রাখবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url