ডাচ বাংলা ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট চার্জ জেনে নিন ?
আপনি কি ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্টের সম্পর্কে সঠিক তথ্য খুজতেছেন। অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোথাও জানতে পারেনি ডাচ বাংলা ব্যাংক সেভিংস অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে। তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই কেননা এখানে বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হবে ডাচ বাংলা ব্যাংকের প্রত্যেকটি সার্ভিস এবং একাউন্ট চার্জ সম্পর্কে।
বেশ কিছুদিন ধরে খেয়াল করে দেখছি মানুষ গুগলে সার্চ করছে ডাচ বাংলা ব্যাংক সম্পর্কে। তাদেরকে সঠিক তথ্য দেওয়ার জন্য এই আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে। সবকিছু জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।
ডাচ বাংলা ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট - মূলভাব
ডাচ বাংলা ব্যাংক, বাংলাদেশের উন্নয়ন খাতের এখন তালিকা রয়েছে ডাচ বাংলা ব্যাংক। ব্যাংক টি বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করে থাকে। প্রতিনিয়ত তাদের গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন অফার এবং আকর্ষণীয় ইন্টারেস্ট রেট সহকারে লোন প্রদান করে। অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় এখানে একটু বেশি সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়।
ব্যাংকটি থেকে বিভিন্ন ধাপে লোন প্রদান করা হয়। যারা প্রবাসী রয়েছে তাদের জন্য টাকা এক্সচেঞ্জ করার সুবিধা রয়েছে। একাউন্টে টাকা আসার সর্বোচ্চ 15 দিনের মধ্যে গ্রাহককে টাকা বুঝিয়ে দেওয়া ব্যাংকের সবচেয়ে ভালো দিক। অনেকগুলো সার্ভিস এর মধ্যে অন্যতম সেভিংস অ্যাকাউন্ট।
এখানে টাকা জমা করতে চাইলে আপনাকে আকর্ষণীয় ইন্টারেস্ট রেট প্রদান করা হয়।নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে এটি কার্যকর। তো বন্ধুরা আসুন আপনাদের মূল্যবান সময় অযথা নষ্ট না করে ডাচ-বাংলা ব্যাংক সেভিংস একাউন্টের সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
ডাচ বাংলা ব্যাংক সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা
ডাচ বাংলা ব্যাংক বাংলাদেশের একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হয়েছে ১৯৯৬ সালে। সরকারি ব্যাংকের তুলনায় ডাচ বাংলা ব্যাংক বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যাংকটি পরিচালনা করা হয়। বিভিন্ন অংশীদার দ্বারা পরিচালিত।
উদ্যোক্তা অনেক হলেও ব্যাংকটির মূল উদ্দেশ্য দেশের ব্যাংকিং খাতকে উন্নত করে তোলা এবং উন্নত মানের ব্যাংকিং সেবা প্রদান করা। ডাচ বাংলা ব্যাংক গ্রাহক সেবার দিক দিয়ে অন্যতম। বেশ কয়েকটি ধাপে সেবা প্রদান করা হয়। মানুষের অবস্থান অনুযায়ী লেনদেন করার সুযোগ দিচ্ছে ডাচ বাংলা ব্যাংক।
এখানে বিভিন্ন ধরনের অ্যাকাউন্ট রয়েছে যেমন সেভিংস একাউন্ট, কারেন্ট একাউন্ট, ফিক্সড ডিপোজিট, ডলার একাউন্ট অর্থাৎ প্রবাসীদের জন্য। আরও বিভিন্ন ধরনের অ্যাকাউন্টিং সুবিধা রয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন বিল প্রদান, এজেন্ট ব্যাংকিং সহ ছোট ছোট লেনদেনের সহায়তা করে।
এর পাশাপাশি কেনাকাটার ক্ষেত্রে ডাচ-বাংলা ব্যাংক কার্ড ব্যবহার করলে আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট পাবেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রত্যেকটি শাখায় একটি করে এটিএম মেশিন রয়েছে। এটার মাধ্যমে গ্রাহকরা কার্ড ব্যবহার করে ইচ্ছামতো টাকা তুলতে পারবে।
সরকারি লেনদেন যেমন শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ভাতা প্রদান করতে ডাচ বাংলা ব্যাংক ব্যবহার করা হয়। নিরাপত্তার দিক থেকে ব্যাংকটি অনেক নিরাপদ কেননা প্রতিনিয়ত প্রযুক্তিগত উন্নয়ন করে গ্রাহকের তথ্যগুলো নিরাপত্তা প্রদান করে।
ডাচ বাংলা ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট চার্জ
ডান্স বাংলা ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট এ কিছু নির্দিষ্ট চার্জ প্রযোজ্য। এগুলো ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে গ্রাহককে ফ্রি পরিশোধ করতে হয়। সেভিংস একাউন্টের মধ্যে কয়েকটি আলাদা সার্ভিস রয়েছে যেমন মাসিক ফ্রি, মিনিমাম ব্যালেন্স, চেক বই এছাড়াও অন্যান্য সার্ভিস সমূহ। ডাচ বাংলা ব্যাংকের সেভিংস একাউন্টে মিনিমাম ব্যালেন্স রাখতে হয়, সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা।
মিনিমাম ব্যালেন্সের থেকে কমে গেলে অবশ্যই চার্জ বেশি প্রযোজ্য। অন্যদিকে গ্রাহকের ব্যালেন্স কম থাকলে কিছু ব্যাংক ফ্রি নিচ্ছে যেমন ১০০ টাকা প্রতি মাসে যদি ব্যালেন্স নির্ধারিত পরিমানের নিচে থাকে। চেক বই নেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ টি চেক বই বিনামূল্যে দেওয়া হয়। এরপর থেকে প্রত্যেকটি বইয়ের জন্য আলাদা চার্জ প্রযোজ্য।
পর্যাপ্ত টাকা না থাকার পরেও লেনদেন করলে অতিরিক্ত চার্জ নেওয়া হয়। অনেক সময় অ্যাকাউন্ট পরিচালনার জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট ফ্রি চার্জ করে। ডাচ-বাংলা ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট এর মধ্যে রয়েছে ইন্টারনেট ব্যবস্থা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা লেনদেন। এক্ষেত্রে প্রতি হাজারের নির্দিষ্ট পরিমাণ চার্জ প্রযোজ্য হয়।
ডাচ বাংলা ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য এটিএম ব্যবহারের সময় কোন প্রকার চার্জ নেয় না এটা সম্পূর্ণ ফ্রিতে প্রদান করা হয়।
ডাচ বাংলা ব্যাংকে একাউন্ট করতে কি কি লাগে
ডাচ বাংলা ব্যাংক যেকোনো একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু তথ্যের প্রয়োজন পড়ে। ব্যাংকটির কয়েকটি একাউন্টের ধরন যেমন
- সেভিংস একাউন্ট
- কারেন্ট একাউন্ট
- ফিক্সটেড ডিপোজিট
- স্কলার একাউন্ট
প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য নির্দিষ্ট ডকুমেন্ট লাগবে যেমন পরিচয় পত্র। পরিচয় পত্রের মধ্যে রয়েছে এনআইডি কার্ড। প্রবাসী হলে পাসপোর্ট এবং ভিসার ফটোকপি শিক্ষার্থীদের জন্য জন্ম নিবন্ধন এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা। বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা।
এগুলো যাচাই করার জন্য বাসার বিদ্যুৎ, পানি কিংবা গ্যাস বিল অথবা ভাড়া বাসায় থাকলে ভাড়া চুক্তি রশিদ সবগুলো ব্যাংকে জমা দিতে হয়। প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্ট এর জন্য সাধারণত ১ থেকে ৪ কপি পর্যন্ত পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগে। বড় অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কর্পোরেট ব্যবহারিত TIN নাম্বার প্রয়োজন পড়ে।
অনলাইন অ্যাকাউন্ট এর ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত সবগুলো তথ্য প্রয়োজন হয়। তবে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের ফরম পূরণ করে প্রত্যেকটি তথ্য স্ক্যান করে সত্যায়িত করতে হয় এবং আরো কিছু ধাপ রয়েছে এগুলো সম্পূর্ণ করার পর আবেদন করতে পারবেন।
লোন আবেদন করার নিয়ম
এখানে লোন আবেদন করা খুবই সহজ। অনলাইনে আবেদন করতে হলে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে ফরম নিতে হবে। এছাড়া নিকটস্থ কোনো শাখায় গিয়ে ফরম পূরণ করতে হবে। সর্বপ্রথম কি ধরনের লোন নিবেন এর জন্য প্রকার গুলো নির্বাচন করতে হবে।
যেমন ব্যক্তিগত লোন, গৃহ নির্মাণ লোন, ব্যবসায়ীক লোন, গাড়ি কেনার জন্য লোন। চাহিদা অনুযায়ী কাঙ্খিত লোনের ধরন নির্বাচন করুন। দ্বিতীয়ত ঋণ সম্পর্কে সকল শর্তাবলী এবং প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানতে হবে।
যেমন ঋণের পরিমাণ, ইতিপূর্বে ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে কোন প্রকার লেনদেন করেছেন কিনা এগুলোর ইতিহাস। তৃতীয়ত রয়েছে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রদান করা। লোন আবেদন করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সঠিক তথ্য প্রদান করা।
আবেদনপত্র সঠিক জায়গায় জমা দেওয়া। আবেদন করার পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার সকল কিছু যাচাই করবে। ঋণের সকল শর্তাবলী মেনে নিলে ঋণ দেওয়া হবে। সর্বশেষ ঋণ পরিশোধ সময়মতো করতে হবে এছাড়া আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে ডাচ বাংলা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন আবেদন করার শর্ত
ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন আবেদন করার পূর্বে কিছু শর্ত রয়েছে এবং ঋণের প্রকার অনুসারে শর্তগুলি কিছুটা ভিন্ন হতে পারে।
- আবেদনকারীর বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বছর হতে হবে অর্থাৎ জাতীয় পরিচয় পত্র থাকা আবশ্যক।
- ইনকামের প্রমাণ, কোন ব্যাংক ইনকাম সোর্স না দেখে ঋণ প্রদান করে না। সেটা হতে পারে সরকারি চাকরি কিংবা বিভিন্ন ব্যবসা।
- কাজের স্থায়িত্ব, চাকরিজীবীদের জন্য ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত কাজের অভিজ্ঞতা। অন্যদিকে ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ব্যবসার নিবন্ধন পত্র আবশ্যক।
- নির্দিষ্ট পরিমাণ ইনকাম থাকতে হবে তাছাড়া লোন পরিশোধ করার সময় সমস্যা হবে।
- কি কারনে ঋণ নিচ্ছেন এটার মূল উদ্দেশ্য উল্লেখ করতে হবে।
- প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রদান করতে হবে , অবশ্যই ১০০% সঠিক তথ্য দিতে হবে।
- সম্পত্তির জামানত, আপনার অনুপস্থিতিতে লোনকে পরিশোধ করবে এ সম্পর্কে একটি জামিনদার অর্থাৎ সম্পদের জামানত প্রয়োজন।
- ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা প্রমাণ দিতে হবে।
উপরে উল্লেখিত শর্তগুলো মেনে নিতে পারলে অবশ্যই খুব তাড়াতাড়ি ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন আবেদন করতে পারবেন।
ডাচ বাংলা ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট - শেষ কথা
আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদের কে ডাচ-বাংলা ব্যাংক একাউন্ট সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি সেভিংস একাউন্ট চার্জ সম্পর্কে সঠিক তথ্যটি জানতে পেরেছেন। এছাড়া কিভাবে লোন আবেদন করবেন এবং কি কি শর্ত রয়েছে সবগুলো দেখিয়েছি।
পোস্টটি থেকে উপকৃত হলে অবশ্যই নিকটস্থ বন্ধু কিংবা আত্মীয়দের মধ্যে শেয়ার করতে ভুলবেন না। প্রতিনিয়ত এ ধরনের আপডেট তথ্য পেতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটে চোখ রাখবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url